ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করার উপায় ২০২৪ – ইউটিউব অ্যালগরিদম সম্পর্কে জানুন

ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করার উপায় : আপনি নিশ্চয়ই একজন ইউটিউবার। আপনি ইউটিউবে অনেক পরিশ্রম করে ভিডিও তৈরি করেন কিন্তু আপনার ভিডিওতে ভিউজ আসেনা। ভিডিও আপলোড করার পর ৫০-১০০ ভিউস আসে তারপর ভিউজ থেমে যায়। এর অর্থ আপনি ইউটিউব এর গোপন টিপস সমন্ধে জানেন না। ইউটিউব এর নিয়ম-কানুন সম্বন্ধে যদি আপনি গোপন বিষয়গুলো জানেন তাহলে আপনার সফলতা এবং আপনার ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল হওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারবেনা।

আজকের এই পোস্টটা মনোযোগ দিয়ে সম্পূর্ণ ফলো করুন। কেননা আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদেরকে এমন কিছু টিপস দেব যেগুলো কেউ আপনাকে বলবে না। আর এর মাধ্যমে আপনি ইউটিউবে একজন সফল ইউটিউবার হতে পারবেন।

দেখুন ইউটিউবে সবাই ভিডিও তৈরি করে ভাইরাল হতে চায়। যে কেউই ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারে কিন্তু সবাই সফল হতে পারেনা। তাই যদি হতো তাহলে ইউটিউবার এর সংখ্যা ইউজারদের চেয়ে বেশি হতো। ইউটিউব ভিডিওতে ভিউজ বাড়াতে চাইলে কিছু নিয়ম-কানুন এবং কিছু টেকনিক জানা আবশ্যক। এই টেকনিক বা নিয়মকানুনগুলো না জানার কারণে আমরা ভিডিও আপলোড করি কিন্তু আমাদের ভিডিও ভাইরাল হয় না। তো কি সেই টেকনিক? কিভাবে ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করবেন তা জেনে নেই।

ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করার উপায় (গোপন টিপস)

১) ভিডিও ক্যাটাগরি

ভিডিও ক্যাটাগরি ভিডিওতে ভিউজ হয়। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও এটা সত্য। আপনার ভিডিও ক্যাটাগরি যদি উদাহরণস্বরূপ ব্লগ টিউটোরিয়াল হয়, তাহলে আপনি প্রতিটা ভিডিও তে লক্ষাধিক ভিউজ কখনোই আশা করতে পারেন না। কারণ এ ধরনের টপিক সবাই তো দেখে না।

যে টপিকের ভিডিও সবাই দেখে সেই টপিকের উপর ভিডিও তৈরি করলে লক্ষাধিক ভিউজ হবে এটাই স্বাভাবিক। আমি বলছিনা ব্লগ টিউটোরিয়াল খারাপ। আমি জাস্ট উদাহরণ দিলাম। কারণ ইউটিউব এর অ্যালগরিদম এমন ভাবে কাজ করে যে, আপনার ভিডিও ইউটিউবের অনেক জনের কাছে রেকমেন্ডেশন বা সাজেস্ট করবে।

যদি তারা আপনার ভিডিও তে ক্লিক না করে তাহলে ইউটিউব সেই ভিডিওটা খারাপ ভেবে সাজেস্ট করা বন্ধ করে দিবে। ফলে আপনার ভিডিওতে ডাউন হয়ে যাবে। তাই চেষ্টা করুন এমন ক্যাটাগরির ভিডিও বানাতে যাতে আপনার ভিডিওগুলো দর্শকের কাছে পৌঁছালে সেগুলো দেখার জন্য অন্তত ১০-২০% লোক ক্লিক করেন।

উদাহরণস্বরূপ মায়াজাল, ফ্যাক্ট চ্যানেল, এম কে টিভি, নিউজ চ্যানেল, রোস্টিং চ্যানেল, ফানি চ্যানেল ইত্যাদি চ্যানেলের ভিডিও তে প্রচুর পরিমাণে ভিউজ হয়। কারণ এগুলো প্রায় সবাই দেখে।

২) ভিডিও টপিক

আপনি যে টপিকে ভিডিও বানাচ্ছেন সেই টপিকটা যদি ভালো না হয় তাহলে আপনার ভিডিও কখনোই ভাইরাল হবে না। যদি আপনি ভিডিও তৈরি করেন যে, কিভাবে ফেসবুকের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে হয়। এই টপিকে ভিডিও বানালে আপনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। কারণ এটা প্রায় সবাই জানে এবং এই টপিকের উপর অনেক ভিডিও আছে।

তাই যদি আপনি এইরকম কমন টপিকে ভিডিও তৈরি করেন তাহলে আপনার ভিডিও রেংক করবে না। আপনি যদি ইউনিক ইন্টারেস্টিং কিছু ভিডিও টপিক নির্বাচন করে ভিডিও তৈরি করেন তাহলে আপনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই চেষ্টা করবেন আপনি প্রত্যেকটা ভিডিও বানানোর আগে চিন্তা করে দেখবেন যে সেই ভিডিওটা আপনার সাবস্ক্রাইবাররা দেখবে কিনা।

প্রত্যেকটা ভিডিও খুবই মজাদার ইন্টারেস্টিং টপিকে তৈরি করবেন যাতে আপনার সাবস্ক্রাইবার রা আপনার ভিডিও দেখার আশায় বসে থাকে।

৩) কোয়ালিটি ফুল ভিডিও তৈরি করুন 

ভিডিও ভাইরাল হওয়ার বা ভিডিওতে ভিউ আসার মূল সিক্রেট হলো ভিডিওর কোয়ালিটি। যদি আপনার ভিডিওর কোয়ালিটি খারাপ হয় তাহলে আপনি কোনদিনও ইউটিউবে সফল হতে পারবে না এবং আপনার ভিডিও কোনদিনই ভাইরাল হবে না। ভিডিওর কোয়ালিটি আপনার যত বেশি ভাল হবে আপনার ভিডিও ততো বেশি রান করবে।

যদি আপনি ১০০ টি কোয়ালিটি ফুল ভিডিও তৈরি করেন তাহলে আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলছি আপনার সফলতা ইউটিউবে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। আর যদি আপনি ১০০০ টিও কোয়ালিটিলেজ ভিডিও তৈরি করেন তাহলে আপনি ইউটিউব এর সফলতা অর্জন করতে পারবেন না।

এখন কোয়ালিটি ফুল ভিডিও বলতে আমরা কি বুঝি? আমরা যেটা বুঝি সেটা হলো যে ভিডিও একদম ক্লিয়ার ও ফ্রেশ হয়ে। আসলে এর নাম কোয়ালিটি না। কোয়ালিটি ফুল ভিডিও মানে হচ্ছে আপনার ভিডিও আপনি এমন ভাবে তৈরি করবেন যেন আপনার দর্শকরা ভিডিও টেনে দেখতে না চায়। অর্থাৎ ভিডিও এমনভাবে ইন্টারেস্টিং মজাদার করে তৈরি করতে হবে যেন কোন দর্শক বোরিং ফিল না করে এবং না টানে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে দেখে।

যদি বেশিরভাগ দর্শক ভিডিও টেনে দেখে তাহলে ইউটিউব সেই ভিডিওটাকে খারাপ ভেবে সেটাকে আর ভাইরাল করে না। ইউটিউব অ্যালগরিদম এভাবেই কাজ করে। ইউটিউব অ্যালগরিদম দেখে কোন ভিডিওটা মানুষ বেশি সময় ধরে দেখেছে এবং মনোযোগ দিয়ে পুরোটা দেখেছে।

তাহলে সেই ভিডিওটা ইউটিউব নিজেই অন্য ভিডিও সাজেস্ট এ দিবে এবং ব্রাউজ ফিচারে সাজেস্ট করবে ফলে ভিডিও রেংকে যাবে। ভিডিওতে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলবেন না। ভিডিওতে মজাদার এবং সঠিক ইনফরমেশন দিয়ে পুরো ভিডিও জুড়ে দর্শককে ধরে রাখার চেষ্টা করবেন।

আর একটা বিষয় রয়েছে সেটা হল যদি আপনি এমন ভাবে ভিডিও তৈরি করেন আপনার ভিডিওতে ক্লিক করা মাত্রই দর্শকগণ চলে যায়। অর্থাৎ আপনার ভিডিওতে ক্লিক করে ১০ সেকেন্ড বা ১৫ সেকেন্ড দেখে বেশিরভাগ দর্শক যদি চলে যায় সে ক্ষেত্রে ওই ভিডিওটা আজীবনেও ভাইরাল হবে না।

তাই আপনারা ভিডিওর প্রথম অংশে খুব ইন্টারেস্টিং এবং কোয়ালিটিফুল করুন যাতে দর্শকগণ প্রথম থেকেই পুরো ভিডিওটা দেখে। কারণ একজন দর্শক প্রথমের একটু ভিডিও দেখেই ডিসিশন নেয় সে পুরো ভিডিওটা দেখবে কিনা।

৪) ভিডিওর ভয়েস কোয়ালিটি ভালো করুন

দর্শকগণ তখনই পুরো ভিডিওটা দেখবে যখন সেই ভিডিওটা ভয়েস কোয়ালিটি ভালো থাকবে। ভিডিও করার সময় যদি আপনি আস্তে আস্তে কিংবা ধীরে ধীরে করে কথা বলেন কিংবা অপ্রয়োজনীয় কথা বলতে থাকেন সেক্ষেত্রে ভিডিও টা সবাই টেনে টেনে দেখবে।

আর যখনই সবাই টেনে টেনে দেখবে তখন ভিডিওটা রেংকে যাবে না। ভিডিওর ভয়েস কোয়ালিটি স্পষ্ট এবং মিষ্টি হতে হবে। সুন্দর একটা ভয়েস কোয়ালিটির মাধ্যমে দর্শকদের ভিডিওতে অনেক সময় ধরে রাখা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ আপনারা মায়াজাল, সোহাগ খন্দকার ইত্যাদির চ্যানেলগুলোর ভয়েস কোয়ালিটি লক্ষ্য করলে আপনারা বুঝতে পারবেন। তাদের শুধুমাত্র ভিডিও ভয়েস কোয়ালিটি ভালো থাকায় তারা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।

৫) ভিডিওতে সাবস্ক্রাইব করার কথা বন্ধ করুন

আমরা অনেকেই আছি অন্যের দেখাদেখি নিজেরাও একই ভুল করে যাই। আমরা অনেকেই আছি যারা ভিডিও শুরুতেই দর্শকদেরকে বলতে থাকি সাবস্ক্রাইব করুন, লাইক করুন, কমেন্ট করুন , সাবস্ক্রাইব করে পাশে থাকা যে ঘন্টাগুলো আছে সেগুলো বাজিয়ে দিন যাতে সকল ভিডিও নোটিফিকেশন পেয়ে যান ইত্যাদি।

এতে দর্শকরা বিরক্ত হয়ে ভিডিও ছেড়ে চলে যেতে পারে এবং বেশিরভাগ দর্শক ভিডিও সেখানে টেনে দেখে। আর ভিডিও টেনে দেখলেই সেই ভিডিওটা ভাইরাল হওয়ার চান্স কমে যায়। সুতরাং ভিডিওতে আপনারা সাবস্ক্রাইব করার কথা খুবই কম বলবেন। আর বললেও খুবই স্মার্টলি বলবেন। আর অবশ্যই এটা ভিডিও প্রথমে বলবেন না আপনারা ভিডিও শেষে সাবস্ক্রাইব করার কথা বলবেন।

৬) ভিডিওর ওয়াচ টাইম এর দিকে নজর দিন

বর্তমান সময়ে ইউটিউব ওয়াচ টাইম এর উপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। অর্থাৎ আপনার একটি ভিডিও আপনার দর্শকরা কত সময় ধরে দেখছে সেটার উপর নির্ভর করে ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে। ৫ মিনিটের একটি ভিডিও যদি দর্শকরা গড়ে তিন মিনিট ধরে দেখে তাহলে সেই ভিডিওটা ওয়াচ টাইম বেশি হবে এবং ভিডিও ভাইরাল হওয়ার চান্স বেশি।

আর পাঁচ মিনিটের একটা ভিডিওতে যদি আপনার দর্শকরা এক মিনিটের কম দেখে তাহলে সেই ভিডিওটার ওয়াচ টাইম বা মিনিট কম হয়ে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে সেই ভিডিওটা ভাইরাল হবে না। সুতরাং কোয়ালিটি ফুল ভিডিও তৈরি করুন যাতে বেশিক্ষণ সময় ধরে দর্শকরা ভিডিও দেখে।

৭) লম্বা ভিডিও তৈরি করুন

ছোট ভিডিও যদি তৈরি করেন সেক্ষেত্রে সেই ভিডিওতে ওয়াচ টাইম খুব কম আসবে এবং ইউটিউব ছোট বা কম দৈর্ঘ্যের ভিডিও গুলো খুবই কম ভাইরাল করে দেয়। লম্বা ভিডিও তৈরি করলে সেই ভিডিওতে প্রচুর ওয়াচ টাইম আসে সে ক্ষেত্রে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ তিন মিনিটের একটা ভিডিওতে গড়ে এক মিনিট করে মানুষ দেখলো। আর দশ মিনিটের একটা ভিডিওতে ৫ মিনিট করে গড়ে দেখলো। তাহলে উভয়ের মাঝে ওয়াচ টাইম এর ব্যবধানটা আপনারা নিজেই অনুমান করুন কোন ভিডিওটা ইউটিউবে ভাইরাল করে দিবে।

৮) সঠিকভাবে ভিডিও এসইও করুন 

ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ক্ষেত্রে ভিডিও এসইও খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয় আবার খুব কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। সঠিক নিয়মে কিওয়ার্ড রিসার্চ করে ট্যাগ, টাইটেল ও ডেসক্রিপশন দিন। আর কিওয়ার্ড রিসার্চ করার জন্য আপনারা ইউটিউবের সার্চ বারে আপনার ভিডিও টপিকটা লিখুন। তাহলে নিচে সাজেশনে অনেকগুলো কিওয়ার্ড আসবে সেই কিওয়ার্ডগুলো আপনি আপনার টাইটেল, ডেসক্রিপশন এবং ট্যাগে ব্যবহার করুন।

পরিশেষে একটাই কথা ইউটিউব এ কাজ করতে হলে ধৈর্যের প্রয়োজন আছে। ধৈর্য এবং কষ্ট ছাড়া কোন কাজে সফল হওয়া যায় না। তাই আপনি সঠিক জায়গায় সঠিক ভাবে সঠিক নিয়মে পরিশ্রম করলে অবশ্যই একদিন সফল হতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ

ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম হয়

This is MOJNU Proud owner of this blog. An employee by profession but proud to introduce myself as a blogger. I like to write on the blog. Moreover, I've a lot of interest in web design. I want to see myself as a successful blogger and SEO expert.

Leave a Comment

Discover more from Technical Bro BD

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading